মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন
মো. মুনিরুজ্জামান: রাজধানীর মগবাজারের ওয়্যারলেস গেট এলাকায় বিস্ফোরণের ঘটনা কোনো নাশকতার বিষয় নয় বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
আজ সোমবার (২৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বেনজীর আহমেদ বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনা কোনো নাশকতার বিষয় নয়, গ্যাস থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল দেখে মনে হচ্ছে, এটি একমুখী বিস্ফোরণ। যদি কোনো নাশকতার বিষয় থাকতো তাহলে বিস্ফোরণে ব্যাপকতা চারদিকে ছড়িয়ে পড়তো। কিন্তু তা হয়নি। এরপরও এই ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি পুলিশ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবে।
বেনজীর আহমেদ আরো বলেন, মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিস একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ ঘটনার অনুসন্ধানে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকেও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। পুলিশের বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্য নিয়ে ওই তদন্ত কমিটিটি গঠিত হবে। কমিটির সদস্যরা ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চালাবে। তিনি বলেন, ঘটনাস্থলে গ্লাস ভাঙার টুকরা ছাড়া অন্য কিছু আমরা পাইনি। এটি একমুখী বিস্ফোরণ হয়েছে। যদি বিস্ফোরক হতো, তবে তিন থেকে চার দিকে এর ব্যাপকতা থাকতো।
আইজিপি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভবনের ভেতরে মিথেন গ্যাস জমে ছিল। ফায়ার সার্ভিস তাদের যন্ত্রপাতি ঘটনাস্থলে নিয়ে এলে গ্যাস রয়েছে কিনা, তা পরীক্ষা করে জানা সম্ভব হবে। তবে বিস্ফোরণ কেন ঘটেছে সেই কারণ অনুসন্ধানে আমরাও কাজ করছি। ঘটনার প্রাথমিক পর্যায়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত না দেই, বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে এ বিষয়ে বলা সম্ভব হবে।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় এ ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে মগবাজারের ওয়্যারলেস গেট এলাকায় অবস্থিত ‘রাখি নীড়’ নামের একটি তিনতলা ভবন ধসে নারী ও শিশুসহ অন্তত সাতজন নিহত হন। আহত হন ওই ভবনের বাসিন্দা, সামনের রাস্তায় থাকা বাসযাত্রী, পথচারীসহ শতাধিক। এর মধ্যে ৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বিস্ফোরণে রাখি নীড় ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয় আশপাশের বেশ কয়েকটি ভবন, তিনটি যাত্রীবাহী বাসসহ বেশ কিছু যানবাহন। আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শেখ হাসিনা বার্ন ইনস্টিটিউট, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল ও কমিউনিটি হাসপাতালসহ কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা মেডিক্যালে ৩৮ জন এবং বার্ন ইনস্টিটিউটে ১০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহতদের মধ্যে কয়েকজন দগ্ধ হয়েছে। বেশির ভাগই ভবনের বিস্ফোরিত অংশ ও কাচের আঘাতে আহত হয়েছে। সন্ধ্যায় ব্যস্ত রাস্তায় বাসে যাতায়াতের সময় বা রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে আকস্মিকভাবে হতাহতের শিকার হন অনেকে।